Travel the world

Post Page Advertisement [Top]

আমলইসলামিক জ্ঞানগুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও আমলদোয়াফজিলত

কয়েকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও আমল

কয়েকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও আমল

দোয়া শব্দের অর্থ আল্লাহকে ডাকা, কিছু চাওয়া, প্রার্থনা করা, অর্থাৎ কল্যাণ ও কল্যাণ লাভের লক্ষ্যে এবং ক্ষতি ও অনিষ্ট এড়াতে সর্বশক্তিমানের কাছে বিনীতভাবে প্রার্থনা করা। মহান আল্লাহ তায়ালা দোয়াকে ইবাদাত হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন এবং এটিকে সাহায্য পাওয়ার মাধ্যম করেছেন। এজন্য পবিত্র কুরআন ও হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে মানুষকে দোয়ার বিষয়ে নির্দেশ তথা তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব, যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা অচিরেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং লাঞ্ছিত হবে।’ (সূরা মু’মিন, আয়াত-৬০) আল্লাহ তাআলা কোন উপলক্ষ্য ছাড়াই মানুষকে মাগফেরাত দেয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। অতএব, আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে আল্লাহর ঘোষণা অনুসারে ডাকলেই বান্দাকে সমস্ত নেয়ামত দান করবেন।

বিভিন্ন ধরনের বালা-মুসিবত দূর করার আমল:

“লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জালিমীন।”

অর্থ: আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমি পাপী। (সূরা: আল আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭)

ফজিলত: (ক) এ আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, আমি নবী ইউনুসের প্রার্থনা মঞ্জুর করেছি। তাকে দু:খ থেকে মুক্তি দিয়েছি। অনুরূপভাবে যে মুমিনরা এ দোয়া পড়বে আমি তাদেরও বিভিন্ন বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি দিব। -(সূরা: আল আম্বিয়া, আয়াত: ৮৮)

(খ) হজরত নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজরত ইউনুস (আ.) এর ভাষায় দোয়া করবে, সে যে সমস্যায়ই থাকুক আল্লাহ তায়ালা তার ডাকে সাড়া দিবেন। (তিরমিজি)

(গ) হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো ইরশাদ করেছেন, আমার ভাই ইউনুসের দোয়াটি খুব সুন্দর। এর প্রথম অংশে আছে কালিমায়ে তায়্যিবা। মাঝের অংশে আছে তাসবিহ। আর শেষের অংশে আছে অপরাধের স্বীকারোক্তি। যে কোনো চিন্তিত, দু:খিত, বিপদগ্রস্থ ব্যক্তি প্রতি দিন এ দোয়া তিন বার পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার ডাকে সাড়া দিবেন। (কানজুল উম্মাল)

আমল: কঠিন বালা-মুসিবত দূর করার জন্য বর্ণিত দোয়া বা আয়াতটি এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পাঠ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে, ওই দোয়া হয়।

রিজিক বৃদ্ধির আমল:

“আল্লাহু লাতীফুম্ বি-ইবাদিহি ইয়ারজুকু মাইয়্যাশায়ু, ওয়া হুয়াল কাভিয়্যুল আজিজ।”

অর্থ: আল্লাহ তায়ালা নিজের বান্দাদের প্রতি মেহেরবান। তিনি যাকে ইচ্ছা রিজিক দান করেন। তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী। (সূরা: শুরা, আয়াত: ১৯)
আমল: যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে, একনিষ্ঠতার সঙ্গে ৭০ বার এ আয়াত পড়বে, সে সর্বদা রিজিকের সঙ্কট থেকে হেফাজতে থাকবে।

স্মৃতি বর্ধনের আমল:

স্মৃতিশক্তির কারণে অনেক শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী নিজে বা তার বাবা-মা প্রতিদিন প্রতি নামাজের পর সূরা আল-আলম নাসারাহ তেলাওয়াত করে বুকে ফুঁ দিবে। সূরা তেলাওয়াতের শুরু ও শেষে একবার দারূদ শরীফ পাঠ করতে হবে। যদি শিক্ষার্থী বুঝতে পারছে, তবে প্রতিবার পড়ার সময়, প্রতিটি ক্লাসের শুরুতে, শিক্ষার কোন কিছু শুরু করার আগে ও পরে, দারূদ শরীফের সাথে এই সূরাটি তেলাওয়াত করে এবং বুকে ফুঁ দেয় এবং যদি নিয়মিত এটি করে, আল্লাহর রহমতে তার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।

শ্রেষ্ঠ দোয়া:

“রাব্বানা আতিনা ফিদ্ দুনইয়া হাসানাহ্, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ্। ওয়াকিনা আজাবান্নার।”

অর্থ: হে আমার প্রভু! আমাকে দুনিয়াতে সুখ দান কর, আখেরাতেও সুখ দান কর এবং আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। (সূরা: আল বাকারা, আয়াত: ২০১)

ফজিলত: এ দোয়াকে সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া বলা হয়ে থাকে কারণ নবী করিম (সা.) এ দোয়াটি সবচেয়ে বেশি পাঠ করতেন। বিশিষ্ট তাবেয়ি হজরত কাতাদাহ (রহ.) সাহাবী হজরত আনাস (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, নবী করিম (সা.) কোন দোয়া বেশি করতেন? উত্তরে সাহাবী হজরত আনাস (রা.) উপরোক্ত দোয়ার কথা জানালেন। তাই হজরত আনাস (রা.) নিজে যখনই দোয়া করতেন তখনই দোয়াতে এই আয়াতকে প্রার্থনারূপে পাঠ করতেন। এমনকি কেউ তার কাছে দোয়া চাইলে তিনি তাকে এ দোয়া দিতেন। (সহীহ মুসলিম) হজরত আনাস (রা.) আরো বলেন, আল্লাহ তায়ালা এ দোয়ায় দুনিয়া ও আখেরাতের সকল কল্যাণ ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা একত্রিত করে দিয়েছেন।

মহান আল্লাহর তাআলার সন্তুষ্টি পাওয়ার দোয়া:

হজরত নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সকালে তিনবার এবং বিকালে তিনবার এ দোয়াটি পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা অবশ্যই কিয়ামতের দিন তাকে সন্তুষ্ট করবেন। -মুসনাদে আহমাদ

“রাজিতু বিল্লাহি রাব্বান, ওয়াবিল ইসলামি দীনান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যান।”

অর্থ :  আমি আল্লাহ তায়ালাকে প্রভু পেয়ে সন্তুষ্ট, ইসলামকে জীবনাদর্শ পেয়ে সন্তুষ্ট ও হজরত মোহাম্মদ (সা.) কে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট আছি।

এই আমল গুলো নিয়মিত করলে, নিয়মিত নামাজ পড়লে ও প্রতিদিন অন্তত কোরআন থেকে ৫ টি আয়াত অর্থ সহ তেলাওয়াত করলে আল্লাহ বান্দার ঈমান বাড়িয়ে দিবেন। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে কোরআনের ঘোষণা অনুযায়ী হাদিসের ওপর আমল সাপেক্ষে আল্লাহর কাছে যথাযথভাবে ধরনা দেয়ার মাধ্যমে নিজেদের প্রয়োজন পূরণে দোয়া করার তাওফিক দান করুন।(আমিন)


Bottom Ad [Post Page]

| Designed by Colorlib