Travel the world

Post Page Advertisement [Top]


সন্তানের সুস্থতা ও সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা নিয়ে সব বাবা-মায়েরই চিন্তা থাকে সব সময়। কারণ পুষ্টির ওপরই শিশুর সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা নির্ভর করে। তাই বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে শিশুর ওজন ও উচ্চতার সঠিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে কি না সে দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। ওজন কম বা বেশি কোনটাই ঠিক নয়। ওজন বাড়ানোর যেমন অনেক অসুবিধা রয়েছে তেমনি কম থাকলেও ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাবার সম্ভাবনা রয়েছে। সময়ের সাথে সাথে শারীরিক অক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে। সুতরাং, শিশুর বয়স হিসাবে ওজন বাড়ছে কিনা তা লক্ষ্য করা উচিত। উচ্চতার জন্য নির্ধারিত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হ'ল জিন, ডায়েট এবং জীবনধারা।

একজন বিশেষজ্ঞের মতে, বাচ্চাদের ওজন ও উচ্চতা তার বা তার সমবয়সীদের চেয়ে কম হলে বেশির ভাগ বাবা-মায়েদেরে এ বিষয়ে চিন্তিত হওয়া স্বাভাবিক। এক এক বয়সে উচ্চতার হার এক এক রকম হয় সে বিষয়ে অবশ্যই সচেতন হন। দুই বছর অবধি বাচ্চারা ২০ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। এর পরে এই হার হ্রাস পেতে থাকে এবং ৫-৬ বছর বয়স পর্যন্ত এই হার বার্ষিক ১০-১২ সেন্টিমিটারে বৃদ্ধি পায়। ৬-৭ বছরে আরও হ্রাস পেয়ে ৫-৬ সেন্টিমিটার হারে বাড়ে। কৈশোরে আবার হঠাৎ লম্বা হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। বাচ্চারা বছরে ১০-১৫ সেন্টিমিটার অবধি বড় হতে পারে। ১৪-১৫ বছর বয়সে বৃদ্ধির হার আবার হ্রাস পায়। ১৯ থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত গড়ে ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমন অনেক খাবার রয়েছে যা আপনার বাচ্চাকে সঠিক ওজন এবং উচ্চতা অর্জনে সহায়তা করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-


ক্যালোরি যুক্ত খাবার

শিশুর শরীরের ওজন বৃদ্ধির জন্য ক্যালোরি গ্রহণের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আপনার বাচ্চাকে ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে দিতে হবে। ফলমূল, মাছ, মাংস, বীজ, বাদাম ইত্যাদির মতো বেশি ফল খাওয়াবেন । শিশুর ওজন বাড়ানোর জন্য তাদের এই জাতীয় খাবারগুলি বেশি খাওয়া উচিত।

পুষ্টিকর খাদ্য

পুষ্টির পরিমাণ বেশি এমন খাবারগুলি শিশুকে প্রায়শই খেতে দিতে হবে। আপনি যে শুধু ক্যালোরি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলিই খাওয়াবেন তা নয়, এমন খাবারগুলি যা আপনার বাচ্চার উচ্চতা ও ওজন বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে তেমন খাবার বেশি বেশি খাওয়াতে হবে। আপনার শিশুর শরীরে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে শর্করা পায় তা নিশ্চিত করুন। এজন্য শিশুকে পুষ্টিকর সব খাবার যেমন ডিম, ডাল, আটা, ঘি, কলা ইত্যাদি খেতে দিন।

সুষম খাবার

আপনার শিশুর খাওয়ার জন্য কী ঠিক তাতে মনোযোগ দিন। প্রতিটি বেলার খাবার সঠিক সময়ে খাওয়ান। প্রতিবেলা নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়ানোর অবভ্যাস করান। দিনের প্রথম খাবার যেন সঠিক এবং পুষ্টিগুণসম্পন্ন হয় তাই সকালে পরিবারের সদস্যদের যথাযথ ও পুষ্টিকর খাবারের যত্ন নেওয়া উচিত। বাচ্চাদের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত রাখুন। একটি শিশুর ওজন বৃদ্ধি মূলত সঠিক খাবার খাওয়ার উপর নির্ভর করে। ডায়েটে সব ধরণের পুষ্টিগুণ রয়েছে কি না তা খেয়াল রাখবেন।

শিশুর জন্য আদর্শ একটি ডায়েট:

  • ডিম:
ডিম ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। স্বাস্থ্যকর দেহ, শক্ত হাড় এবং উচ্চতা বাড়ানোর জন্য, সিদ্ধ ডিম অবশ্যই শিশুর টেবিলে রাখতে হবে। কারণ শিশুর উচ্চতা বাড়াতে ডিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতএব, যদি বাচ্চা ডিম খেতে না চায়, তবে তাকে বিভিন্ন কৌশলে ডিম খাওয়ানোর চেষ্টা করা দরকার।
  • দুধ:
দুধের ক্যালসিয়াম বাচ্চার বৃদ্ধি ও হাড়ের জন্য খুব দরকারী খাদ্য উপাদান । দুধ উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য মুখ্য ভূমিকা রাখে এবং এতে থাকা ভিটামিন এ ক্যালসিয়াম শরীরে ধরে রাখতে সহায়তা করে। তাই আপনার বাচ্চাকে নিয়মিত দুধ দেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হন। এতে করে আপনার শিশু খুব শীঘ্রই বড় হবে এবং পড়াশোনার বিষয়ে খুব যত্নশীল হবে।
  • কলা:
কলা বাচ্চাকে বড় করার জন্য অনেক উপকারী খাবার। সুস্থ থাকার জন্য, শক্ত হাড় তৈরি করতে আপনার বাচ্চাকে নিয়মিত কলা দিয়ে খাওয়ান। উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করার পাশাপাশি কলা হজমে সহায়তা করে এবং আপনার শিশুর পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করবে।
  • সামুদ্রিক মাছ:
সামুদ্রিক মাছ প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ। স্যালমন এবং টুনার মতো মাছগুলিতে ভিটামিন ডি এবং প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকে। এটি আপনার শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সহায়তা করবে। তাই আপনার বাচ্চা যতবার খাচ্ছে সে সময় সমুদ্রের মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • দই:
যে কোনও দুগ্ধজাত খাবারে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম থাকে। দইতে ভিটামিন এ, বি, ডি এবং ই রয়েছে যা শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সহায়তা করে। তাই শিশুর উচ্চতা বাড়াতে দই বেশি ঘন ঘন খাওয়া উচিত। তাহলে বাচ্চা খুব দ্রুত বেড়ে উঠবে।
  • গাজর:
গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং এ রয়েছে ভিটামিন এ আপনার শিশুর শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমান ঠিক রাখতে সহায়তা করে। হাড় মজবুত এবং সুস্থ্য রাখে। তাই শিশুকে রান্না করা বা কাঁচা গাজর খাওয়ানোর অভ্যাস করান।
  • পালংশাক:
এই শাকগুলিতে প্রচুর প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং পুষ্টি থাকে। এটি আপনার শিশুর উচ্চতা বাড়াতে ব্যাপক সহায়তা করবে। আপনার বাচ্চাকে পালং শাক খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। পালং শাক খাওয়ানোর অভ্যাস করালে আপনার শিশুর উচ্চতা সম্পর্কে চিন্তা করার আর দরকার পরবে না।
  • সয়াবিন:
সয়া হাড়ের ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম প্রবেশে সহায়তা করে। এছাড়াও সয়াবিন এবং সয়াযুক্ত দুধ খাবার বাচ্চাকে দিতে পারেন। এটি শিশুর হাড় মজবুত করতে সহায়তা করবে।
  • হাঁস-মুরগি:
হাঁস-মুরগিতে সর্বাধিক প্রোটিনের মাত্রা থাকে। এটি শরীরের টিস্যু এবং পেশী গঠনে ভাল ভূমিকা পালন করে। তাই আপনার বাচ্চাকে নিয়মিত মুরগি খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।

পরিমিত পরিমণে পানি পান করা:

আপনার বাচ্চাকে ক্যাফিন, কার্বনেট জাতীয় খাবার থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করানোর চেষ্টা করুন। পরিমিত পরিমাণে পানি পান শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলি সরিয়ে দেহের বিপাক বৃদ্ধি করে এবং হাড় বৃদ্ধির কাজ করে।

ঘুম: 

এটি প্রমাণিত হয়েছে যে ঘুমের সময়, শরীর বৃদ্ধি পায় এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম টিস্যুকে সতেজ করে। সুতরাং, ক্রমবর্ধমান শরীরে ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ শরীরের উচ্চতা বাড়াতে কমপক্ষে আট থেকে সাত ঘন্টা গভীর ঘুম প্রয়োজন।


Nahida Sultana

Bottom Ad [Post Page]

| Designed by Colorlib