Travel the world

Post Page Advertisement [Top]


প্রায় সমস্ত মানুষ জীবনের কোনও না কোনও সময়ে হতাশায় ভুগেছেন অথবা বন্ধু বা নিকটতম ব্যক্তিকে হতাশায় ভুগতে দেখে এটির সম্পর্কে একটি ধারণা পেয়েছেন।দুঃখজনক হলেও সত্য যে আপনার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করার বোঝা কেবল আপনার উপর চাপানো হয়েছে। যদিও পরিবার এবং বন্ধুরা আপনাকে হতাশার হাত থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করতে পারে তবে এ ব্যাপারে আপনার চেষ্টাই আসল। মানসিক হতাশায় আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে হতাশা থেকে মুক্তির পথ আরও অনেক কঠিন।রক্তশূন্যতা, বিষণ্নতা, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, ঘুমের সমস্যা বা ওজন বাড়ার মতো ক্লান্তি বা হতাশার একটি স্পষ্ট কারণ রয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বা অবসাদ কখনও কখনও মারাত্মক শারীরিক সমস্যার কারণে ঘটতে পারে। আপনি যদি দীর্ঘকাল ধরে ক্লান্ত বোধ করেন তবে অবশ্যই আপনাকে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। ক্লান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এখানে কিছু উপায় রয়েছে যা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি এবং অবসাদ থেকে মুক্তি দিতে পারে।

একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পান:

আপনি যদি কেবল গৃহিণী হন তবে বিকেলে কিছুটা হাঁটুন বা কাছের মার্কেট থেকে ঘুরে আসতে পারেন। এটি আপনার একঘেয়েত্ব অনেকটা লাঘব করবে এবং বিকেলে আর ক্লান্তিও লাগবে না।  একঘেয়েমি কিছু ক্ষেত্রে ক্লান্তির একটি প্রধান কারণ। সুতরাং আপনার অবশ্যই একঘেয়ে বিষয়গুলি কাটিয়ে উঠতে হবে। সপ্তাহে একদিন বেড়াতে যান, হ্যাংআউট করুন, কিছু মজার অনুশীলন উপভোগ করুন, মজাদার ক্রিয়াকলাপ করুন, আপনি দেখবেন যে বিরক্তিকর ক্লান্তি বা ক্লান্তিভাব চলে গেছে।

চাপমুক্ত থাকুন:

স্ট্রেস বর্তমানে ক্লান্তির এক অন্যতম কারণ। এই স্ট্রেস শরীরে অতিরিক্ত অ্যাড্রেনালিন এবং অন্যান্য হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায়। এটি হার্টের স্পন্দন বাড়ায় এবং দেহে শক্তির সরবরাহ বাড়ায়। তবে এই অতিরিক্ত শক্তি আপনাকে ক্লান্ত করে তোলে। আপনি সর্বদা চাপমুক্ত থাকুন। স্ট্রেস আপনার দেহ এবং মনকে পিষ্ট করে। সুতরাং যদি আপনি ক্লান্তি বা ক্লান্তি থেকে মুক্ত থাকতে চান তবে চাপমুক্ত থাকার কৌশলগুলি শিখতে হবে। এবং তার আগে আপনাকে জানতে হবে কীভাবে চাপ আপনাকে প্রভাবিত করে। আপনার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থাটি পর্যবেক্ষণ করুন: আপনি কি ঘাড়ের স্ট্রেন অনুভব করছেন? আপনার কি পেট খারাপ? আপনার পিঠে ব্যথা আছে? নাকি উদ্বিগ্ন বোধ করছেন? আপনি কি কোন কারণে হতাশ? অকারণে রাগ করা? মাথা ঘোরা? একবার আপনি নিজের চাপের বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ণয় করতে পারলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া সুবিধাজনক। কিছু শিথিল কৌশল যেমন গভীর শ্বাস এবং যোগব্যায়াম আপনার শরীরকে অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এবং যদি আপনার সর্বদা নেতিবাচক মনোভাব থাকে তবে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান।

ঠিক মতো ঘুমানোর অভ্যাস করুন:

আপনি যদি রাতে মাত্র তিন থেকে চার ঘন্টা ঘুমান, তবে আপনি ক্লান্ত এবং দুর্বল বোধ করবেন। তবে, যদি এক ঘন্টা কম বা বেশি হয় তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির সাথে সম্পর্কিত নয়। আক্ষরিক অর্থে অনেক লোকের দিনে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুম দরকার হলেও দিনে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা ঘুমান। রাতে এক দু’ বার ঘুমের ব্যাঘাতে আপনার খারাপ নাও লাগতে পারে, তবে পর্যাপ্ত ঘুম হওয়া জরুরী। আপনি যদি ভাল করে ঘুম না হয় তবে আপনি কোনও কিছুর প্রতি মনোনিবেশ করতে পারবেন না।  অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে পর্যাপ্ত ঘুম সচেতনতা এবং শক্তির স্তর বাড়ায়। এ জন্য বিকেলে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিজের ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। 

সুখের জন্য খাবার:

হতাশা দেখা দিলে মানুষের ক্ষুধা হ্রাস বা বৃদ্ধি পায়। তবে সঠিক খাবার খেয়ে ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করা উত্তম মানসিক হতাশায় ভুগলে বাদাম, ব্ল্যাকবেরি, ডার্ক চকোলেট, টমেটো, শাকসবজি, নারকেল, মধু এধরনের খাবার খান। এই খাবারগুলি দেহে এন্ডোরফিন নিঃসরণের স্তর বাড়ায় যা আপনাকে মানসিক সুখকে বাড়িয়ে তুলবে।

বাইরে বেড়াতে যান: 

আপনি যদি মানসিক সুস্থতা বাড়াতে চান তবে নিশ্চিত করুন যে শরীর পর্যাপ্ত সেরোটোনিন রয়েছে এবং সেরোটোনিন নিঃসরণ এর মাত্রা ঠিক রাখতে, শরীরে পর্যাপ্ত রোদের তাপ প্রয়োগ করা প্রয়োজন। তাই, যখনই আপনি মানসিক অবসাদে ভুগবেন তখন বাইরে গিয়ে সূর্যের আলোয় ঘোরাঘুরি করে নিবেন তাহলে বাহিরের পরিবেশে ঘোরার জন্য আপনার মানসিক অবসাদ দূর হয়ে যাবে এবং শরীরও সতেজ থাকবে। 

ধুমপান ত্যাগ করতে হবে:

৩০০০ জনের একটি সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে যে ধূমপায়ীদের আজীবন হতাশা বৃদ্ধির ঝুঁকি ৬.৬ শতাংশ। কিন্তু অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি মাত্র ২.৯ শতাংশ। সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে ৭০ শতাংশ পুরুষ ধূমপায়ী এবং ৮০ শতাংশ মহিলা ধূমপায়ী তাদের জীবনে অন্তত একবার হলেও বড় ধরনের হতাশায় ভুগে থাকেন এর মূল কারণটি হল নিকোটিন। নিকোটিন এর মাত্রার বিভিন্নতা মানুষের মস্তিষ্কে উদ্বেগ বাড়ায় এবং উদ্বেগের মাত্রা বৃদ্ধি এবং মানসিক অবসন্নতা তৈরির মধ্যে এটির যোগসূত্র রয়েছে।  

আস্তে আস্তে ওজন কমানো:

হঠাৎ করে ওজন কমানো ঠিক নয়। আস্তে আস্তে ওজন হ্রাস করুন, সপ্তাহে অন্তত আধা কেজি করে। এটিকে অত্যধিক হ্রাস করা আপনার পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণও হতে পারে। হঠাৎ ওজন হ্রাস আপনার ক্লান্তি এবং পিত্তথলির ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। কেবল এটিই নয়, আপনার হার্টেরও সমস্যা দেখা দিতে পারে।

নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্তি থাকুন:

ক্লান্তি আপনার মধ্যে অতিরিক্ত নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে। এটি থেকে দূরে থাকা খুব কঠিন। তবে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা ত্যাগ করুন এবং আরও সুষম চিন্তা করুন। এতে আপনার মানসিক সুখ বাড়বে। নেতিবাচক মনোভাবযুক্ত লোকের কাছাকাছি থাকা ত্যাগ করুন এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ মানসিক অবসাদ দূর করতে আশ্চর্যজনক ভাবে কাজ করে।



Nahida Sultana

No comments:

Post a Comment

Bottom Ad [Post Page]

| Designed by Colorlib