Travel the world

Post Page Advertisement [Top]

Sliderএলার্জিএ্যাজমাটিপস্মুক্তিরোগ-ব্যাধিস্বাস্থ্যকথা

এলার্জি, এ্যাজমা থেকে মুক্তির জন্য করনীয়

এলার্জিঃ-

প্রত্যেক মানুষের শরীরে এক একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকে, কোন কারণে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থায় গোলযোগ দেখা দিলে তখনই এলার্জির বহির্প্রকাশ ঘটে।আমাদের শরীর সব সময়ই ক্ষতিকর বস্তুকে (পরজীবী ছত্রাক, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া) প্রতিরোধের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করে। এই প্রচেষ্টাকে রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়া বা ইমিউন বলে। কিন্তু কখনও কখনও আমাদের শরীর সাধারণত ক্ষতিকর নয় এমন অনেক ধরনের বস্তুকেও ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। সাধারণত ক্ষতিকর নয় এমন সব বস্তুর প্রতি শরীরের এই অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে এলার্জি বলা হয়। এলার্জি সৃষ্টিকারী বহিরাগত বস্তুগুলোকে উৎপাদক বা এলার্জেন বলা হয়। যখন এলার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

এ্যাজমাঃ-

এ্যাজমা হলো এমন এক প্রকার রোগ যে রোগে আক্রান্ত লোকেরা শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় কষ্ট অনুভব করে। কারণ-শ্বাসনালীর প্রাচীর স্ফীত হয়ে যায়, শ্বাসনালী সুরু হয়ে যায়, শ্লেষ্মা জমা হয়। এই সমস্যাগুলোর কারণে ফুসফুসে বাতাস প্রবেশের এবং নির্গত হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি হয়। সশব্দ শ্বাস-প্রশ্বাসই এ্যাজমার একমাত্র লক্ষণ নয়: শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় যদি বুকে শনশন শব্দ হয়, তাহলে খুব সহজেই এ্যাজমা চিহ্নিত করা যায় এছাড়া আরো কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে যা কিনা এ্যাজমার কারণে হয়ে থাকে সেগুলো হল- বিশেষ করে রাতের বেলায় দীর্ঘক্ষণ ধরে জোরে কাশি শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যপ্তিকাল হ্রাস পাওয়া এবং কষ্টকর শ্বাস-প্রশ্বাস। বুকের উপর চাপ অনুভব করা। শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বুকে শনশন শব্দ হওয়া অথবা ব্যায়ামের সময় জোরে কাশি (ব্যায়াম এ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ায়) উপরে বর্ণিত লক্ষণসমূহ অন্যান্য কারণেও প্রকাশ পেতে পারে। আমাদের উচিত এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া।

এলার্জি, এ্যাজমা এবং শ্বাসকষ্ট রোগ থেকে মুক্তির জন্য কিছু বিষয় রোগীদের পালন করা জরুরী। ঔষুধ ছাড়া শুধু নিয়মতান্ত্রিকভাবে জীবন যাপন করলে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এই রোগীদের চলাফেরা, ওঠাবসা, খাবার সব বিষয়ে সচেতন থাকতে হয়।

করণীয়ঃ-

কার্পেট ব্যবহার না করা।
সম্পূর্ণ রুপে ধূমপান পরিহার করা।
বাসায় কোন প্রকার পোষা প্রাণী না রাখা।
মশার কয়েল বা স্প্রে করার সময় নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা
উচ্চ মাত্রার সুগন্ধি ব্যবহার না করা।
ধূলাবালি থেকে বাচতে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা।
ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময় নাকে মুখে মাস্ক, তোয়ালে বা গামছা ব্যবহার করা।
বিছানা বা কার্পেট, পুরাতন বই পত্র অন্য কাউকে দিয়ে ঝেড়ে নেওয়া।
টিভি, মশারি-স্ট্যান্ড, সিলিং ফ্যানের উপর জমে থাকা ধূলা-বালি সপ্তাহে অন্তত একবার অন্য কাউকে দিয়ে পরিস্কার করে নেওয়া
বাস, মোটরগাড়ী বা যানবাহনের ধোঁয়া থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা বা মাস্ক ব্যবহার করা।
শীতের সময় শীতবস্ত্র ধুঁয়ে ব্যবহার শুরু করা।
লেপ ভাল করে রোদে শুকিয়ে ব্যবহার করা।
শীতের সময় উলেন কাপড়ের পরিবর্তে সুতি/ জিন্সের কাপড় ব্যবহার করা।
পুরাতন/ বাক্সবন্দী জামা-কাপড় ধুঁয়ে রোদে ভাল করে শুকিয়ে ইস্ত্রী করে ব্যবহার করা।
যেকোন স্যাঁতস্যাঁতে স্থান এড়িয়ে চলা।
হাটার সময় ঘাস পরিহার করা।
ছোট বা বড় ফুল ধরা গাছের নিচে / পাশে না বসা।
রান্না করার সময় মশলার ঝাঁঝাঁলো গন্ধ এড়াতে মাস্ক বা গামছা ব্যবহার করা।
ফ্রীজে রাখা খাবার ভালো করে গরম করে গ্রহন করা।
ঘরে ধূঁপ ব্যবহার না করা।
ব্যবহৃত বিছানায় চাদর, বালিশের কভার এবং মশারীর সপ্তাহে একবার ধুঁয়ে ফেলা।
ঘর থেকে ছারপোকা, তেলাপোকা চিরতরে নির্মূল করা।
ঠান্ডা পানি এবং খাবার পরিহার করা।

যেসব খাবার পরিহার করা উচিতঃ-

মাছ-ইলিশ, চিংড়ি
মাংস-গরুর মাংস
দুধ
ডিম-হাঁসের ডিম (সাদা অংশ)
সবজি-মিষ্টি কুমড়া, কচু, বেগুন
ফল-আপেল, কলা

পালনীয়ঃ-

প্রতিদিন সকালে ও বিকালে মুক্ত পরিবেশে ১০ (দশ) মিনিট শ্বাসের ব্যায়াম করলে উপকার পাওয়া যায়।
সুযোগ পাইলে জোরে জোরে শ্বাস টানা।
শ্বাস গ্রহনের পর প্রায় ১৫ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখার অভ্যাস করা।
দুই ঠোট শীষ দেওয়ার ভঙ্গিতে এনে ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে শ্বাস ত্যাগ করা।
শ্বাসকষ্ট বেশী হলে ভেন্টোলিন/ এ্যাজমাসল/ সালটলিন ইনহেলার ২ কাফ করে ৫ মিনিট নেওয়া।
শ্বাসকষ্ট এতে শ্বাসকষ্ট না কমলে দেরী না করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সবসময় হাসি-খুশি থাকলে ভালো হয়।
ভয়, হতাশা ও চিন্তাগ্রস্থ না হওয়া।
ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ও পরামর্শ মেনে চলা ভালো।

মীর মারুফ ফেরদৌস
মা ফার্মেসি
পালবাড়ী মোড়,পুরাতন কসবা,নূতন খয়েরতলা, যশোর।

Bottom Ad [Post Page]

| Designed by Colorlib